
ডেস্ক রিপোর্ট :
চট্ট্রগামে ২ বিদেশি নাগরিক সহ শীর্ষ ২ আরএসও জঙ্গি নেতা আটকের পর কক্সবাজার ও বান্দরবনের সীমান্ত এলাকার রোহিঙ্গা জঙ্গিদের মাঝে আতংক দেখা দিয়েছে। ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে অনেক জঙ্গি নেতা দেশ ছাড়ার জন্য বিভিন্ন দেশের ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করছে। এদিকে আটক আরএসও নেতা শফিউল্লাহ ও সালামত উল্লাহ’র বহু অজানা তথ্য বের হয়ে আসছে।
রবিবার দুপুরে চট্টগ্রামের একটি হোটেল থেকে রোহিঙ্গা জঙ্গি নেতা শফিউল্লাহ ও সালামত উল্লাহ বিদেশি ৩ জঙ্গি আটক হয়। কক্সবজারের বিসিক এলাকার আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা জামায়াত নেতা সালামত উল্লাহ। অন্যদিকে নাইক্ষ্যংছড়ির আওয়ামীলীগ নেতা পরিচয়ে আরএসও নেতা শফিউল্লাহ। আটককৃত পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের এই নেতাদের অধিকতর জিঙ্গাসাবাদের জন্য ঢাকায় জয়েন্ট ইন্টারগেশন সেলে জিঙ্গাসাবাদ করা হচ্ছে।
আটককৃত সালামত উল্লাহ এবং শফিউল্লাহ মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদি সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছে। সালামত উল্লাহ আরএসওর বাংলাদেশ শাখার সেকেন্ড ইন কমান্ড ও শফিউল্লাহ মজলিসে সুরার ১ নাম্বার সদস্য বলে জানা গেছে। এই সংগঠনের প্রধান হিসেবে কাজ করছে কক্সবাজারের বহুল আলোচিত আরএসও নেতা হাফেজ সালাহুল ইসলাম। কিছু দিন আগে গ্রেফতার হলেও আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতার মদদে জামিনে বেরিয়ে এসেছে সালাহুল ইসলাম। আরএসওর কেন্দ্রীয় প্রধান মোহাম্মদ ইউনুসের সাথে দুজনেররই সরাসরি যোগাযোগের প্রমানও রয়েছে।
এই জঙ্গি নেতারা রোহিঙ্গা রিফিউজি হিউমেন রাইটস ও ইত্তেহাতুল জামিয়াতুল রোহিঙ্গা নামের দুটি জঙ্গী সংগঠন সরাসরি পরিচালনা করে আসছে। এই দুই সংগঠনের সুরা কমিটিতে রায়েছে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের আরো একাধিক রোহিঙ্গা জঙ্গি নেতা। এরা হলেন আরএসওর সামরিক প্রশিক্ষক মাস্টার আইয়ুব, রোহিঙ্গা জঙ্গিদের মুখপাত্র কালাদান প্রেসের আবু তাহের প্রকাশ পিন্টু, কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলির মৌলভী আবু সালেহ, টেকনাফের শাপলাপুরের মৌলভী আজিজ ও ডাঃ খাইরুল আমিন।
এই জঙ্গি নেতারা কক্সবাজারের কুতুপালং শরনার্থী শিবিরে ও নাইক্ষনছড়ি থেকে জঙ্গীদের সংগঠিত করে প্রশিক্ষন দেয়। আফগানিস্থান ও পাকিস্থানে জঙ্গি প্রশিক্ষন ও সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা মিয়ানমারের নাগরিক মাস্টার আইয়ুব আরএসওর জঙ্গিদের অস্ত্রের প্রশিক্ষন দিয়ে আসছে। বিভিন্ন অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহারকারী মাস্টার আইয়ুবের রয়েছে অস্ত্রের বিশাল ভান্ডার। এই জঙ্গিরা গত বছর নাইক্ষ্যংছড়িতে অভিযানের সময় অস্ত্রের মুখে কক্সবাজারের এক পুলিশ উপ পরিদর্শক সহ ৫ পুলিশকে অপহরণ করেছিলো। ঘটনাটি গোপন রেখে পুলিশ সমঝোতার মাধ্যমে অপহৃত ৫ পুলিশ সদস্যকে মুক্ত করে এনেছিলো। বিষয়টি ঐ সময় ধামাচাপা দেয়া হলেও এখন তা প্রকাশ হওয়া শুরু করেছে। জিঙ্গাসাবাদে আরএসও নেতা শফি উল্লাহ ও সালামত উল্লাহ পুলিশ সদস্যদের অস্ত্রের মুখে অপহরণের কথা স্বীকার করেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে আরএসওর এই ২ শীর্ষ নেতা আটক হওয়ার পর গ্রেপ্তার আতংকে ভুগছেন জঙ্গি নেতারা। এছাড়াও গা ডাকা দিয়েছে কক্সবাজারের ও বিভিন্ন শরনার্থী শিবিরের বসবাসকারী অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা জঙ্গি। গ্রেপ্তার এড়াতে এই জঙ্গী নেতারা প্রতিদিনই তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছে।
বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর হওয়ায় তা নিয়ে কোন কথা বলছে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। চিহ্নিত জঙ্গি ও তাদের প্রতিষ্ঠানের উপর বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে।
উৎস দৈনিক কক্সবাজার
–
পাঠকের মতামত